ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া ::
দুই বছর আগে ভয়াবহ বন্যা ও ভারী বর্ষণে চকরিয়ার ছিকলঘাট-জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর সড়ক ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ওই সময় জনপ্রতিনিধিরা সড়কটি চলাচল উপযোগী করার জন্য অনেক দেন-দরবার করেন।
এতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক মেরামতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অংশ হিসেবে দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে মেরামত কাজ শুরু হয়নি। এতে একেবারে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়ক। এরই মধ্যে চলে আসছে বর্ষাকাল। এই অবস্থায় জনদুর্ভোগ আরো চরমে পৌঁছবে বলে এলাকাবাসীর আশঙ্কা।
এদিকে সড়কের মেরামত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে এলাকাবাসী কয়েক দফা মানববন্ধন করেছেন ক্ষত-বিক্ষত সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শওকত ওসমান। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজেম উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুজ্জমান অহিদসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই বছর আগে ভয়াবহ বন্যা ও অতি বর্ষণের কারণে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের শান্তিবাজার থেকে লক্ষ্যারচর হয়ে ছিকলঘাট-জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর-ইয়াংছা সড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বর্তমানে সড়কটির বিভিন্ন অংশে অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি বড় ধরনের গর্তেরও সৃষ্টি হয়েছে। তবে সড়কটি মেরামতে সড়ক বিভাগ ইতোমধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেরামত কাজ বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগ করে। কিন্তু ঠিকাদারদের সঙ্গে দলাদলির কারণে সড়ক মেরামতের কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থার কারণে সড়কটি দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়েছে। পাশাপাশি চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ওই এলাকার লক্ষাধিক মানুষ।
মানববন্ধনে উপস্থিত ভুক্তভোগী জনগণ ঘোষণা দেন, অচিরেই সড়কটির মেরামত কাজ শুরু না হলে পরবর্তীতে আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত ওসমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে শান্তিবাজার থেকে কাকারা-মানিকপুর-ইয়াংছা পর্যন্ত সড়কটি মেরামতের জন্য কক্সবাজার সড়ক বিভাগ ৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে কয়েকবার দরপত্র আহ্বান করেছে। কিন্তু সড়ক বিভাগের সঙ্গে ঠিকাদারদের বনিবনা না হওয়ার কারণে সঠিক সময়ে মেরামত কাজ শুরু করা হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে সড়কটির বেহালদশার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধের উপক্রম হচ্ছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এই অবস্থায় ক্ষুব্ধ মানুষ উল্টো আমাদের তথা সরকারের সমালোচনা করছে। তাই হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ দিতে আশাকরি সড়ক বিভাগ অতি দ্রুত সড়ক মেরামতের উদ্যোগ নেবে।’
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের চকরিয়া কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু আহসান মোহাম্মদ আজিজুল মোস্তফা চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘সড়ক মেরামতে ইতোমধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এটি অনুমোদনের জন্য কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন বিভাগে প্রেরণ করেছে। সেখানে অনুমোদন হয়ে গেলে আমরা ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেব। এর পর মেরামত কাজ শুরু হবে। সেই পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে।’
পাঠকের মতামত: